Wednesday, June 13, 2012

আমার চলচ্চিত্র দর্শন-লালটিপ by দূর্যোধন


বেশ কিছুদিন হইতেই দেশ ও জাতির চিন্তায় নিদ্রা আসিতেছিলো না।এই অধম খালি ফেসবুক আর ব্লগ তোলপাড় করিয়া ফেলিতেছে,অথচ দেশ ও জাতির উন্নয়নের জোয়ারে তাহার ভুমিকা কি?এরুপ চিন্তায় আচ্ছন্ন হইয়া ভাবিলাম কিছু একটা করা দরকার।তবে দূর্যোধন যেহেতু সাধারন কিছু করিয়া উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিবেনা ,সুতরাং অসাধারন কিছু একখানা করার বাসনায় ভাবিলাম-সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাঙ্গালা চলচ্চিত্রের দর্শন করিয়া দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখি।

৫৫ টাকার টিকেটে কি আর অত অর্থনীতির চাকা সচল হয়? সুতরাং বসুন্ধরার প্রেক্ষাগৃহে যাইয়া ১৫০ টাকার টিকেট কিনিয়া স্বেচ্ছা-পোঙামারা খাইবার ব্যবস্থা করিলাম। পোঙামারা খাওয়া সুদৃঢ় করিবার নিমিত্তে সর্বভুক একখানা ছোটভাইকে খবর দিলাম।লাফাইতে লাফাইতে উহাকে লইয়া বসুন্ধরায় হাজির হইলাম।উহাকে বলিলাম,'কি ছবি দেখা যায় ?'' ,একগাল হাসিয়া ছোটভাই বলিলো,''কুসুমের রান'' । থতমত খাইয়া গেলাম,বলে কি? এরুপ অশ্লীল নামের ছবি বসুন্ধরার মতন সুশীল সমাজে?দেশটা রসাতলে গেলো বুঝি !মনের ভাব পড়িতে পারিয়া ছোটভাই বলিলো,''আজ্ঞে,লাল টিপ দেখিবো'' ।

রাগ হইলাম,বলিলাম,''তবে কুসুমের রান বলিলি কেন'' ? , চালিয়াৎমার্কা হাসিয়া ছোটভাই বলিলো,আজ্ঞে,স্লিপ অফ টাং,উক্ত পোস্টার দেখিয়া জিহবা পিচ্ছিল হইয়া গিয়াছে '' -বলিয়া পোস্টারের দিকে আঙুল তুলিলো।



পোস্টার দেখিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলিলাম, স্লিপ অফ টাং অথবা জিহবা পিচ্ছিল হওয়াই স্বাভাবিক।দেশ ও জাতির অর্থনীতির চাকা সচল করিতে উহাকে টাকা ধরাইয়া দিলাম,ছোটভাইকে অভিজ্ঞ মনে হইলো।দুদ্দার করিয়া এক্সপার্টের ন্যায় টিকেট কাটিয়া মায় অন্ধকারের মাঝে সীটও খুজিয়া বসাইয়াও দিলো !

বসিতে না বসিতেই খেয়াল হইলো প্রেক্ষাগৃহে দর্শককূল জোড়ায় জোড়ায় বসিয়া আছে,আমার ঠিক বাদিকেই আসিয়া বসিলো প্রেমাতুর কপোত-কপোতি আর ডানদিকে ছোটভাইয়ের পাশে বসিলো এক হতচ্ছাড়া বছর দশেকের হোৎকা বালক।ছোটভাইকে বলিলাম,'এই হোৎকা বালক বাংলা ছবি দেখিতে আসিয়াছে,নির্ঘাত স্কুল পালাইয়াছে,দেশের বালকসমাজের অবক্ষয়....উহার মা-বাবাকে পাইলে উচিত কথা শুনাইয়া দিতাম..... ''ইত্যাদি !!

ছোটভাই আশ্বস্ত করিলো,'উহার পাশে উহার মা-ও আছে '' ! ভীমদর্শন মহিলার বপু দেখিয়া কথা আর বাড়াইলাম না।

ছবি শুরু হইতে না হইতে সবাই দাড়াইয়া গেলো,ছোটভাই বলিলো,উঠেন উঠেন !! আমি বুঝিতে পারিলাম না কি হইয়াছে ! সে বলিলো,জাতীয় পতাকা খাড়া করা হইয়াছে,তৎক্ষনাৎ আমার দেশপ্রেম জাগিয়া গেলো,বুকের বাম হাত ঠেকাইয়া সম্মান প্রদর্শন করিতে গিয়া খেয়াল হইলো,সামনে আরেকজোড়া ককপোত-কপোতী নিজেদের মাঝে প্রেমপ্রদর্শনে ব্যাকুল।
'ওরে,এইখানে খাড়া না হইলে ঐখানেও খাড়া হইবেনা রে !!' বলিয়া হাঁক দিতে গিয়া থামিয়া গেলাম।সুশীল প্রেক্ষাগৃহের সম্মান বলিয়া কথা !!

ছবি শুরু হইলো,মহান পরিচালক বাঙালকে প্যারিস দেখানো শুরু করিলেন।প্যারিসের বিশিষ্ট বাঙালী সাচ্চু সাহেব ও তার স্ত্রী মেমী শ্যালিকা নিধি (কুসুম শিকদার) ও তাহাদের একখান কন্যা (শিশুটির নাম খেয়াল নাই,বড়ই কিউট) লইয়া সমাজসেবা করিতে ব্যস্ত।কুসুম শিকদারের সহিত তাহারা অর্নব (ইমন) নামক রমনীর বিবাহ করানো ঠিক করিয়া ফেলিয়াছেন।কিন্তু কুসুম শিকদার আবার আরেকখানা ইয়ে,উনি তাহার বিদেশী বয়ফ্রেন্ড লরেনবাবুকে চুম্মা দিতে দেন না,কারন তাহার কাছে দেশ-মাতৃকা-সমাজ-সংস্কৃতি ইত্যকার বিষয় ''আগে আসলে আগে পাইবেন ভিত্তিতে'' থাকে।তবে উনি আবার বাঙাল মুলুকের রাজকন্যা ইমনকে বিবাহ করিতে চান না।

সাচ্চু সাহেব ঠিক করিলেন কুসুম রাজি না হইলেও ইমনের সাথে উনি বিবাহ বসাইয়া ছাড়িবেনই।সুতরাং কুসুম তাহার ম্লেচ্ছ বয়ফ্রেন্ডের বাসায় পালাইয়া যাওয়া ঠিক করিলেন।এইখানে দেখিলাম আজব কাহিনি,সারা জীবন শুনিয়াছি মানুষ এক কাপড়ে পালায়,উনি দেখি রাস্তাঘাটে টুকিটাকি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র যা কিছু আছে,সব সংগ্রহ করিয়া গায়ে জড়াইয়া লইয়াছেন(একটা জিনিস অবশ্য কমন-উহা হইলো লং আন্ডু,যাহাকে আপনারা টাইটস বলিয়া থাকেন ) ।উহার বয়ফ্রেন্ড আবার বিশ্বপ্রেমিক টাইপ মহাপুরুষ,এই বয়ষ্ক প্রেমিককে পরিচালক কোথা হইতে যোগার করিয়াছেন আল্লা মালুম !আধাবুড়া লরেন সাহেব আবার গোটাদশেক বান্ধবীর সাথে রাতযাপন করেন,কুসুমকে 'ইন্ডিয়ান মসলা' বলিয়া হালকা রগড়ও করেন,মানে ব্লগীয় পরিভাষায় ব্যাটা একখানা লুল !

তো,কুসুম পালাইয়া লরেন সাহেবের বাসায় চলিয়া আসিলেন,ঐদিকে প্যারিসের বাঙালী কম্যুনিটিতে ছিছি পড়িয়া গেলো,ইমন সাহেব কুসুমকে খুঁজিতে বাহির হইলেন।লরেন কুসুমকে বলিলেন,সন্ধ্যা ৬টায় উনি ফিরিবেন।সুতরাং ততক্ষন কুসুম যেন বিশ্রাম করিয়া লয় ( হারামজাদা আপিসে করেটা কি ?পুরা ছবিতেই উহাকে রগড় করিতে দেখিলাম।কে জানে রগড় করাই তাহার চাকরি কিনা ) ! 
ঐদিকে কুসুম তাহার বয়ফ্রেন্ডের বাসায় ঘি মাখন তেল খুজিতে গিয়া পাইলেন গোটাতিনেক ছেড়া কনডোম ! ছোটভাই বলিলো,ইহা কি ??আমি আহলাদিত হইয়া বলিলাম,পরিচালকের সিম্বোলিক শট দেখিয়াছিস?কনডোম দেখাইয়া বুঝাইয়া দিলো-লরেন ক্ষমতাবান,রুপবান,গুনবান এবং বীর্যবান!!
এরসাথেই কুসুম পাইলেন একখানা ব্রা আরেকখানা রাতপোষাক (উহা কি,তা নিশ্চিত হইতে গিয়া ছোটভাইয়ের দিকে তাকাইলাম,সে দেখি হাঁ করিয়া ব্রা গিলিতেছে )।কুসুমের সাথে সাথে দর্শকও বুঝিলো লরেন ব্যাটায় লুল,তাহাদের আহাউহুঁ শুনিয়া আমিও বুঝিলাম-ফরিদুর রেজা টাকলু আর পরিচালক ব্যাটাও লুল।এরই মাঝে লরেনের ফ্ল্যাটে প্রবেশ করিলেন লরেনব্যাটার এক্স গার্লফ্রেন্ড।উনি কাঁদিয়া কাটিয়া বলিলেন লরেন আরো ৭০ মহিলার সাথে রগড় করিতেছে ( রোসো ! ব্যাটা ইহজনমেই ৭০টা হুর পাইয়া গেলো)। এতগুলা কনডোম আর বক্ষবন্ধনী দেখিয়া ভয়েই কিনা,কুসুম পালাইলেন।

কুসম পালাইলেন,তাহাকে ধরিতে লরেন ব্যাটায় সন্ধ্যা ৬টায় আসিলো!( কুসুমের রূপেই কিনা,চারিদিকে তখন দিবা ১২ ঘটিকার আলো !! ) দুঃখের গান ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজিলো,ইমন একখানা পুল ধরিয়া হাটিতে হাটিতে কুসুমকে খুঁজিতে লাগিলেন,আমিও নিশ্চিত হইলাম এইবার হইবে থ্রীসাম ,মানে তিনজনের দেখা।আমার অভিজ্ঞতা ভুল প্রমান হইলোনা,লরেন আসিয়া বলিলো কুসুমকে লইয়া সে হানিমুন বানাইয়া ইয়ে করিবে,ইমন সাহেবের পৌরুষে লাগিলো,উনি একখানা ঘুঁষি হাকাঁইলেন,ফলাফলস্বরুপ লরেন সাহেব ভূপাতিত।ছোটভাই বলিলো,''ধুস শালা!এক ঘুঁষিতেই শেষ ?'' । আমি বলিলাম,'' লরেন সাহেবের ৭০ হুর পুষিতে খরচটা কোন দিক দিয়া যায়,তা যদি বুঝিতে !! '' 
অবিবাহিত ছোটভাই চুপ মারিলো।

এরপর যা হইবার তাই,ইমন সাহেবের ফ্ল্যাটে গিয়া কুসুম উঠিলেন,ইমন সাহেব তার সতীপনা দেখাইতে পার্কে গিয়া ঘুমাইলেন।এর মাঝে কুসুমও ঘুম হইতে উঠিয়া নাচিয়া কুঁদিয়া লইলেন,অতঃপর বাহিরে গিয়া দেখিলেন ইমন সাহেব কোনো এক বিদেশিনীর সাথে গাল ঘষাঘষি করিয়া সম্ভাষন জানাইতেছে।ইহাতে তাহার খুব রাগ হইলো,ইমনের সাথে সম্পর্কছেদের ঘোষনা দিলেন।

ইন্টারমিশন শুরু হইতেই সর্বভুক ছোটভাই বলিলো ক্ষুধা লাগিয়াছে।ভয়ে ভয়ে বলিলাম বাইরে চলো,বিড়ি টানিয়া আসি।সে হাস্যভরে তাচ্ছিল্য করিয়া বলিলো,বাহিরে যাওয়া যাইবেনা,ওয়ান ওয়ে টিকেট। ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের প্যাকেট দেখিয়া উহাকে আঙুল দেখাইয়া বলিলাম,উহা খা। সে বলিলো,''পপচিকেন ?'' ।মুর্খ আমি মাথা নাড়াইয়া সায় দিলাম।বিল দিতে গিয়া দেখি ভালোই খসিলো,বলিলাম ''ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কি এত দামী নাকি রে ?'',সে বলিলো,আপনি পপচিকেন চেনেনা ?মুরগীর প্যাকেটের দিকে তাকাইয়া পোঙামারা হজম করিলাম। 

ইন্টারমিশন শেষ হইতেই আবার গান শুরু।কুসুম শিকদার সপরিবারে টাঙাইল চলিয়া আসিয়াছেন,তবে এই মোবাইলের যুগে উনি ইমন কে তাহার আসিবার কথা জানাইতে বেমালুম ভুলিয়া গিয়াছেন।নিশ্চিতভাবেই উনি উনার জোড়াতালি মার্কা পোষাকগুলি আনিতে ভুলেন নাই।ঐ গন্ডগ্রামের মাঝেই উনি গামবুট,কোট,মিনিস্কার্ট,ফ্রক এবং অবশ্যম্ভাবীরুপে টাইটস পরিয়া ঘুরিতে লাগিলেন।ইমন সাহেবও প্যারিস হইতে ঢাকায় চলিয়া আসিলেন।শুরু হইলো খোঁজ দ্যা সার্চ।খিক খিক হাসি শুনিয়া পাশের কপোত কপোতীর দিকে তাকাইলাম,নিজেদের মাঝেই কুসুম আর ইমন কল্পনা করিয়া লীলাখেলা শুরু হইবে হইবে অবস্থা। নজর চলচ্চিত্রের দিকে ফিরাইলাম,সবাই তো আর দূর্যোধনের মত সাধু নহে।

এইদিকে ভাঁড়ামী কিছু চরিত্র থাকিতেই হয়,এই ছবিতে তাহার ব্যাতায় ঘটিলোনা। চেয়ারম্যান চাচা আর ভাতিজা মিলিয়া গনহারে কাতুকুতু দেয়া শুরু করিলেন।হাই তুলিয়া আমি পাশের হোৎকামত বালককে চোখ মারিলাম,''ছবি কিবা ??'',বালক বলিলো,''বলিউড নকল'' । আমি আবার চোখ মারিলাম,''নায়িকা কি বা?? '',বালক আমাকে হতভম্ব করিয়া চোখ মারিলো,বলিলো-''জব্বর''।

হতচকিতভাবটা কাটাইয়া আবার নজর দিলাম,ইউনেস্কোতে ফোন করিয়া কুসুম ইতমধ্যে ইমনের বাংলাদেশের ঠিকানা জানিয়া গিয়াছে বলিয়া গুরুনিতম্ব দুলাইতেছে,অন্যদিকে ইমন বন্ধুর মাধ্যমে কুসুমের গ্রামের বাড়ীর ঠিকানা জানিয়া গিয়াছে বলিয়া ইয়ে দুলাইতেছে,পাশে আমার ছোটভাইয়ের শরীর দুলিতেছে বলিয়া উহার দিকে তাকাইলাম।সে উক্ত বালকের সাথে বাহাসে ব্যস্ত।বলিলাম,''কি হইয়াছে?'' ছোটভাই বলিলো,''পানির বোতল রাখিয়াছিলাম,হোৎকাবালক দাবী করিতেছে এই বোতল নাকি উহার !!''। ঘটনা দেখিয়া সিদ্ধান্তে আসিলাম,বালক খালি চরিত্রহীনই নয়,চোট্টাও বটে !

এরইমাঝে হারাইয়া যাওয়া নায়ক-নায়িকার দুইজনের একত্রে কোনো এক স্থানে দেখা হইয়া যাইবার সম্ভাবনা দেখা দিলো।আমি ছোটভাইকে বলিলাম ,'ছবি শেষ হইতে কতক্ষন আছে'? সে বলিলো '২৫ মিনিট' । আমি বলিলাম,'নায়ক নায়িকার দেখা হইবেনা।'আমার ভবিষ্যতবানী অক্ষরে অক্ষরে মিলিলো,বিশালাকায় নিতম্বের অধিকারিনীর পিছন দিয়া ভুঁড়ি ঠেলিতে ঠেলিতে নায়ক চলিয়া গেলো,কেউ কাহাকেও দেখিলোনা।

এইবার খবর আসিলো নায়ক সাহেবের অংকিত ফটুক প্যারিসের কোনো এক মিউজিয়াম কিনিয়া নিয়াছে বলিয়া তাহার ইন্টারভিউ নিবে রেডিও ফুর্তি।ঐদিকে নায়িকা ঠিক করিলো সে ইমন কে খুঁজিতে চলিয়া যাইবে প্যারিস।নায়িকা রওনা দিলো এয়ারপোর্টে।অন্যদিকে রেডিও ফুর্তিতে বকবকবকবক করিতে করিতে আরজে মহিলা ঘোষনা দিলো,এইবার আপনার সামনে আসিবেন বিশিষ্ট লেখক,রম্যকার,নাট্যকার,চলচ্চিত্রকার,গীতিকার,সুরকার,ফিচারিস্ট,কলামিস্ট,বলারিষ্ঠ,সারিবাদ্যরিষ্ঠ আনিসুল হক । থুক্কু ইমন। উনার সাথে কথা বলিতে হইলে ইয়েস চাপুন আর মেসেজ করুন এই এই নাম্বারে ,আর কথা না বলিতে চাইলে নো চাপুন আর মেসেজ করুন এই এই নাম্বারে ইত্যকার বকবকবকবক !!

কুসুম ধুপ করিয়া ফোন লাগাইলেন,ঘোৎঘোৎ করিতে গিয়া খেই হারাইলেন,নায়ক ব্যাটা অনুষ্ঠান ফালাইয়া এয়ারপোর্ট বরাবর দৌড় ঝাড়িলেন। ছোটভাইকে বলিলাম ''ফিল্ম আর কতক্ষন আছে? '' ।ছোটভাই ইংগিত বুঝিয়া বলিলো,''এইবার দেখা হইবেই '' ।বিজ্ঞের মত মাথা নাড়াইয়া আমিও সায় দিলাম,এইবার দেখা হইবেই।ইমন আসিয়া দেখিলেন প্লেন উড়িয়া গিয়াছে,রাখিয়া গিয়াছে ধুম্র।আমি বলিলাম নায়িকা পিছন হইতে হাত রাখিবে,ছোটভাই বলিলো লাল কাপড় পরিয়া আসিবে।

নায়িকা পিছন হইতে লাল নেইলপলিশ লাগানো হাত নায়কের পিঠের উপর রাখিলেন,আমি আর আমার ছোটভাই প্রশংসার দৃ্ষ্টিতে একজন আরেকজনের দিকে তাকাইলাম।ছবি শেষ হইলো,আমি চলচ্চিত্রের পজেটিভ দিক খুঁজিতে লাগিলাম- 

@কুসুম বড়ই পর্দানশীন বাঙালী নারির চিত্রে মানাইয়া গিয়াছেন,।পুরা ছবিতেই নায়ক হইতে শুরু করিয়া সবাইকেই টিশার্ট ও হালকা কাপড়ে দেখিলাম,কিন্তু কুসুম শিকদার পর্দা বাড়াইবার জন্য একটার উপর আরেকটা কাপড় পড়িয়াই গিয়াছেন।
@কুসুম শিকদার কাপড় বানাইতে গিয়া সময় নষ্ট করেন নাই,রেডিমেড কাপড় পড়িয়াছেন।তাহার সবগুলা ব্লাউজ হয় হাতা,না হয় পিঠ ঢিলা হইয়া ঝুলিতেছিলো।অবশ্য ব্লাউজগুলো হস্তিকুলের জন্য বানানো হইয়াছিলো কিনা জানিতে পারিনাই।
@স্কুলের পিটি করানো শিক্ষকেরা নির্দ্বিধায় এফডিসিতে চাকুরি খুঁজিতে পারেন,আমার দেখা সেরা নৃত্যমুদ্রা এইখানে দেখিলাম,যেন ড্রিল করিতেছি ! হক মওলা !
@আলুর নতুন ইংরেজি 'টাইটস' হইতে পারে,কেননা আলুই একমাত্র খাদ্য যাহা সব তরকারীতে দেয়া যায়।টাইটসও একমাত্র বস্ত্র যাহা ফ্রক,মিনিস্কার্ট এমনকি রাতপোষাক ও শাড়ীর নিচেও পড়া যায়।জয়তু কুসুম 'টাইটস' শিকদার !
@ইমন খুব ভালো অভিনয় করিয়াছেন।নায়িকার চরিত্রে উনাকে ভালই মানাইয়াছে।ন্যাচারাল।
@যাহারা প্যারিস যান নাই,তাহাদের জন্য মাস্ট সী মুভি।কাহিনির তুলনায় পরিচালক প্যারিসের চ্যাম্পস সিসেলি,মিউজে ডি অরস,আইফেল টাওয়ার আর রাস্তাঘাট ঘুরাইয়া ফিরাইয়া বারবার দেখাইয়াছেন।এই মূহুর্তে আমাকে প্যারিসের রাস্তায় ছাড়িয়া দিলে ফ্রেঞ্চ কোনো নাগরিকের আগেই পৌঁছাইতে পারিবো।একই কথা গানের ক্ষেত্রেও খাটে,কুমিরের বাচ্চার মতো বার বার শুনিয়া মুখস্ত হইয়া গিয়াছে।
@বিদেশীদের সাথে আমাদের ইংরাজীর দৌড় দেখিয়া মুগ্ধ হইয়াছি,প্রথমে বুঝিতেই পারিনাই,আমি বাংলা ছবি দেখিতেছি নাকি ফ্রেঞ্চ মুভি।ছোটভাই ভুল ধরাইয়া দিয়াছে,উহারা নাকি ইংরেজীতে কথা বলিতেছিলেন।
@ক্যামেরার কাজ দুর্দান্ত হইয়াছে,ভদ্রলোক আর কিছুদিন ক্যামেরা ধরিলে দুষ্টলোকেরা কাপড় পরিহিতার সবই দেখিয়া ফেলিবে।কি তার এনাটমি জ্ঞান !!কি উপর হইতে ,কি নিচ হইতে !বাভুল,তুই বুখে আয় !
@কুসুম শিকদার,অসামান্য তার বস্ত্রজ্ঞান ! কনফিউজড ! হটপ্যান্ট পড়িয়া ভাবিলেন,বেশি দেখাইয়া ফেলিলাম?সুতরাং নিচে একখানা টাইটস পড়িয়া লইলেন,অতঃপর ভাবিলেন বেশি ঢাকিয়া ফেলিলাম? সুতরাং টাইটস গুটাইয়া হাঁটু পর্যন্ত আনিলেন।আহা !


বাহির হইতে গিয়া ছবির নাম খানা লালটিপ রাখিয়াছে কেন তাহার সন্তোষজনক উত্তর পাইয়া গেলাম । কেননা পাশের কপোত তাহার কপোতীকে টিপিয়া টিপিয়া ততক্ষনে লাল বানাইয়া ফেলিয়াছে।



1 comment:

  1. As reported by Stanford Medical, It's really the one and ONLY reason women in this country get to live 10 years more and weigh an average of 19 kilos less than we do.

    (By the way, it has NOTHING to do with genetics or some secret-exercise and really, EVERYTHING related to "how" they are eating.)

    BTW, What I said is "HOW", and not "WHAT"...

    Tap this link to find out if this quick test can help you decipher your true weight loss possibilities

    ReplyDelete